জীবনবৃত্তান্ত

হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক আল হোসাইনী(রঃ)

হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক আল হোসাইনী(রঃ)

হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক আল হোসাইনী (রহঃ)-এর সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত -(১৩৩১-১৩৯৪ বঙ্গাব্দ)।


শ্রীহট্ট ও তরফ বিজয়ী সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীন (রহঃ)-এর বংশে যে ক’জন আরেফে ইরফান, আলীম‑উলামা, মরমী কবি ও সাহিত্যিক‑গবেষকের জন্ম হয়েছে তাদের মধ্যে সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক আল্ হোসাইনী (রঃ) অন্যতম স্মরনীয় ব্যক্তিত্ব।আরেফে ইরফানিয়াত মশহুর পীর,ইসলামিক লেখক ও গবেষক  সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক আল হোসাইনী (রঃ) ১৩৩১ বাং, ৩রা কার্তিক হবিগঞ্জ জেলার প্রসিদ্ধ সুরাবই সাহেব বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি বংশকৌলীন্য,উঁচুমানের ব্যক্তিত্ব, সততা-নৈতিকতার বিচারে সর্বোপরি একজন ঈর্ষণীয় ‘আইকন’ ছিলেন। পিতা হযরত সৈয়দ মোঃ ইসমাইল আল হোসাইনী (রঃ) একজন জমিদার, আলেম ও আরেফে ইরফানিয়াত মশহুর পীর ছিলেন।উল্লেখ্য যে,তার পিতামহ হযরত সৈয়দ মোহাম্মদ নাদে আলী (রহঃ) তাহার নাম “ইসহাক” রাখিয়া ওসিয়ত করেছিলেন এই সন্তান দ্বারা পাক পান্জাতনের প্রচার প্রসার এবং শান‑শাওকাত বৃদ্ধি পাইবে।বাস্তবে ঠিক তাই ঘটেছিল।আল্লাহর ওলীর আওলাদ ছিলেন, ভাইবোন বন্ধুবান্ধবগনও কামেল ওলী ছিলেন। জন্ম থেকে বেড়ে উঠেছিলেন আউলিয়া পরিবারে।তরফ ও সিলেট রাজ্য বিজয়ী সিপাহসালার হযরত সৈয়দ নাসির উদ্দিন (রহঃ) থেকে সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক আল হোসাইনী (রঃ) পর্যন্ত বংশক্রমঃ সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীন (রহঃ) > সৈয়দ শাহ সিরাজ উদ্দীন (রহঃ) > সৈয়দ শাহ মুসাফির (রহঃ) > সৈয়দ শাহ খোদাওন্দ (রহঃ) > সৈয়দ ইসরাইল বন্দেগী শাহ (রহঃ) >সৈয়দ ইসমাইল (রহঃ) >সৈয়দ শাহজালাল (রহঃ) >সৈয়দ শাহ আহমদ (রহঃ) >সৈয়দ মাইনুদ্দিন (রহঃ) >সৈয়দ নাজিম উদ্দিন (রহঃ) > সৈয়দ সানাঊল্লাহ (রহঃ) > সৈয়দ নাদির হোসেন (রহঃ) > সৈয়দ মোহাম্মদ নাদে আলী (রহঃ)[গোকর্ণ থেকে চন্দ্রচুড়ী]>সৈয়দ মোহাম্মদ ইসমাঈল আল হোসাইনী (রহঃ) [চন্দ্রচুড়ী থেকে সুরাবই] > সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক আল হোসাইনী (রহঃ)।

পিতার আদরের পুত্র সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক (রহঃ) এর বাল্যকাল কাটে অত্যন্ত আনন্দ ঘন পরিবেশে। তার ডাক নাম ছিল মধু মিয়া,তবে সবাই বড় সাহেব বলেই জানত।ইলমী জগতের ভাবগাম্ভীর্য্যপূর্ন  ব্যক্তিত্বের অধিকারী সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক (রহঃ) তার পিতৃপুরুষগনের ধারাবাহিকতায় শিশুকাল থেকেই আধ্যাত্বিক জ্ঞান‑গুনে সমৃদ্ধ ছিলেন।ছাত্র বয়সেই ইসলামের সকল অনুশাসন অনুশীলনে তিনি ছিলেন অগ্রগামী নামাজ ‚রোজা, ও অজিফায়ে আমল সবসময় যথেস্ট আগ্রহের সাথে আদায় করতেন।কখনোই দুস্টুমি করতে দেখা যায় নাই। এমন কি ছেলেবেলায়ও খেলাধুলায়ও তাকে পাওয়া যেত না।তিনি সবসময় পড়ালেখা নামাজ রোজা কোরআন শরিফ তিলাওয়াত নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতেন। ফাহেসা বিষয়ে তার কোন আগ্রহ ছিল না কোন সময়ই।শিক্ষা-দীক্ষা রিয়াযত‑রিয়াছত সব কিছুই সাধিত হয় তাঁর শ্রদ্ধেয় পিতা আধ্যাত্নিক পুরুষ হযরত সৈয়দ মোঃ ইসমাইল আল হোসাইনী (রঃ))-এর একান্ত তত্বাবধানে। তিনি তাঁর স্বীয় পিতা নিকট বায়াত গ্রহণ করেন।পরবর্তীতে তিনি শায়েস্তাগন্জ স্কুল হতে ম্যাট্রিক পাস করেন তিনি জগদীশপুর ও শায়েস্তাগন্জ মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেন।অতঃপর দিল্লী থেকে আরবি-ফার্সী সাহিত্যে তৎকালীন সময় উপযুক্ত ধর্মীয় শিক্ষায় সম্মান সুচক সর্বোচ্চ ডিগ্রী লাভ করেন। প্রচন্ড মেধাবী হওয়ার কারনে জীবনের প্রতিটি পরিক্ষায় প্রথম স্থানে অধিকার করেন। তিনি সমবয়সীদের মধ্যে অসাধারণ প্রতিভার ও সূক্ষ্মদর্শিতার পরিচয় দেন এবং এ ব্যাপারে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী হন। শিক্ষা গ্রহণকালে তিনি শিক্ষকদের কাছে বহু প্রশ্ন করতেন এবং এমনকি শিক্ষকদের ভুল নির্দেশ করতেন। সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক (রহঃ) ২৫ বছর পূর্ণ হবার আগেই তিনি ইজতিহাদী স্তরে উপনীত হন। এ সময়রে দ্বীনী শিক্ষার্থীদের মধ্যে মর্যাদা, খ্যাতি ও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণের দিক থেকে কেউ তাঁর ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেন নি। তাছাডা শীর্ষস্থানীয় ফক্বীহ্ ও মারজা‘এ তাক্বলীদগণের এবং অন্যান্য শিক্ষকের নিকট উচ্চতর পর্যায়ের দ্বীনী জ্ঞান অর্জন করেন। ফলে এ সব শহরের দ্বীনী জ্ঞানচর্চাকারীদের মহলে তিনি সুপরিচিত ও খ্যাতির অধিকারী হয়ে ওঠেন এবং দ্বীনী ‘ইলম ও সাহিত্য চর্চার যে কোনো মজলিসে ব্যক্তিগতভাবে স্থানলাভ করেন।

সে যুগে যে শিক্ষা পার্থিব উন্নতির বাহন হতে পারতো, প্রথমতঃ সেই ধরনের শিক্ষা তিনি লাভ করেন। বাজারে যেসব বিদ্যার চাহিদা ছিল, তাতেও তিনি পারদর্শিতা অর্জন করেন। অতঃপর এ বস্তুকে নিয়ে তিনি ঠিক সেখানেই পৌঁছেন সেখানকার জন্যে এটি তৈরি হয়েছিল এবং তৎকালে একজন আলেম যতদূর উন্নতির কল্পনা করতে পারতেন, ততদূর তিনি পৌঁছে যান।নিজের যুগের তত্ত্বগত নৈতিক ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও তমুদ্দুনিক জীবনধারাকে যত গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন, ততই তাঁর মধ্যে বিদ্রোহের আগুন জ্বলতে থাকে এবং ততই বিবেক তারস্বরে শুরু করে যে, এই পুঁতিগন্ধময় সমুদ্রে সন্তরণ করা তোমার কাজ নয়, তোমার কাজ অন্য কিছু।সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক (রহ:) আধ্যাত্মিক জ্ঞানের প্রতি ছিল অগাধ তৃষ্ণা। তাই অল্প সময়ের মধ্যে পড়াশুনা শেষ করে সৃষ্টি রহস্যের সন্ধানে নিজেকে মারেফত চর্চায় মনোনিবেশ করেন।অতঃপর পিতার নিকট থেকে তরীকতের খেলাফত প্রাপ্ত হয়ে হযরত সৈয়দ শাহ কারার ফুলশাহ মগফুর (রঃ) দরগাহ, ইমামবাড়া ও পার্শ্ববর্তী গ্রাম পুরাসুন্ধা ইমামবাড়ার মােতওয়াল্লী ও গদ্দীনশিন পীর হিসেবে গদ্দীনশিন হন।

সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক (রহ:) সিলেটের বিখ্যাত মরমী সাধক খান বাহাদুর দেওয়ান হাসন রাজার পরিবারে বিবাহ করেন। খান বাহাদুর দেওয়ান হাসন রাজার ছেলে সাধক ও কবি জমিদার খান বাহাদুর দেওয়ান একলীমুর বাজার মেয়ে দেওয়ান বেগম বানু রাজা চৌধুরীকে বিবাহ করেন। সাংসারিক জীবনে তিনি তিন ছেলে চার কন্যার জনক। ছেলেরা যথাক্রমে সৈয়দ ইনছারুল হক (বুলবুল), সৈয়দ সামসুল হক বকুল, সৈয়দ ছানাউল হক ফরহাদ। মেয়েরা যথাক্রমে সৈয়দা উম্মুল ওয়ালা খাতুন শােভা, সৈয়দা শাহানা বেগম কিরন, সৈয়দা রওশন জাহান সুফিয়া, সৈয়দা সুলতানা জাহান আছমা। সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক রহ: সন্তানরা তাদের বাবা হযরত কে আদর করে ময়না বাবা বলে সম্বোধন করতেন।কর্মজীবনে তিনি কিছু দিন চা বাগানে চাকুরী,একাধারে ১৫ বছর সরপঞ্চ এবং ১৯৪৫ সালে হবিগঞ্জের অনারারী ম্যাজিষ্ট্রেট হিসাবে দায়িত্ব পালন ছারাও জর্জ কোর্ট স্পেশাল জোরার হিসেবেও কাজ করেছেন।

সৈয়দ মােঃ ইসহাক (রহ:)দ্বীনের জ্ঞানকে সঞ্জীবিত ও সতেজ করেন।চেতনাবিহীন ধার্মিকতাকে অর্থহীন গণ্য করেন। অন্ধ অনুসৃতির কঠোর বিরোধাতা করেন।আমাদের এদেশের তথাকথিত লেবাজদারী আলেমগণ যুক্তি তর্ক, চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই মন্তব্য করতে সিদ্ধহস্ত। স্থান‑কাল‑পাত্র‑ভেদে কথা বলতে হয় কিভাবে তা তারা জানে না। এ অবস্থা চলে আসছে অনেক পূর্ব হতে। বৃটিশ রাজত্বেও তারা ইংরেজী শিক্ষা হারাম বলে এ দেশের মুসলমানদের পিছিয়ে দিয়েছিল ।এ রকম অগণিত ভুল তথ্য দিয়ে ও ভুল ঘটনা ঘটিয়ে সর্বনাশ করে দিয়েছে এ দেশের মানুষকে। এ সকল গোড়ামীর বিরুদ্ধে কথা বলতেন সৈয়দ মােহাম্মদ ইসহাক(রহ:)। তাই এক শ্রেণীর আলেম তাকে নানাভাবে হাদীস দলিল দিয়ে ঘায়েল করার বৃথা চেষ্টা করেছে। তাদের সকল অপচেষ্টাই ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।জনগণকে পুনর্বার খোদার কিতাব ও রসূলের সুন্নতের উৎস ধারার দিকে আকৃষ্ট করেন। ইজতিহাদের প্রাণশক্তিকে সঞ্জীবিত করার চেষ্টা করেন। এবং নিজের যুগের প্রায় প্রত্যেকটি দলের ভ্রান্তি ও দূর্বলতার সমালোচনা করে তাদেরকে ব্যাপকভাবে সংশোধনের আহবান জানান।সৈয়দ মােঃ ইসহাক(রহ:) অত্যন্ত জ্ঞান পিপাসু ও ছিলেন জ্ঞানের মহাসাগর তুল্য। জানার আগ্রহ ছিল তার কল্পনাতীত। জ্ঞানীদের তিনি খুব কদর করতেন। আধ্যাত্মিক জগতে তার স্থান ছিল অনেক উর্ধ্বে। হাদীস‑কোরআন সম্পর্কে তার ধারণা ছিল স্বচ্ছ।তিনি কোন প্রকার গোঁড়ামির মধ্যে ছিলেন না।গোঁড়ামির স্থান তিনি দিতেন না।

তিনি বড় মাওলানা ও মুফতিদের সাথে কুরআন কিতাবাদী নিয়ে আলােচনায় বসতেন। তত্ত্বতল্লাশীতে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। যে কোন বিষয় তিনি অন্ধের ন্যায় বিশ্বাস করতেন না। তার অর্থ, প্রয়ােজন, সব কিছু গবেষণা করে আলেম বুজুর্গের সাথে আলােচনা করে গ্রহণ ও বর্জন করতেন। লেখা পড়া যতটুকু করেছেন তার চেয়ে অনেক বেশী তিনি গবেষণা করেছেন। যার দরুন তার বক্তব্যে, চাল‑চলনে ফুটে উঠতাে অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। মিথ্যাকে বর্জন, সত্যকে গ্রহণ ছিল তার এ গবেষণার উদ্দেশ্য এবং স্বার্থান্বেষী মহলের হাত থেকে ধর্মকে রক্ষা করা। তিনি সারা জীবন ধরে মানুষকে সত্য পথের সন্ধান দিয়েছেন। অন্যায়ের সাথে কখনও আপােষ করেননি। যার দরুন তাঁর অনেক শত্ৰু ছিল। শত্রুরা সারা জীবনই ছিল তার পদানত।সৈয়দ মােহাম্মদ ইসহাক (র:)অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। তাঁর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলা সম্ভব হতাে না। চোখে ছিল এক অভাবনীয় তেজ। তাঁর চরম শত্ৰুরা পর্যন্ত তার সামনে দাঁড়িয়ে চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারতাে না। কেন বলতে পারতাে না তা কেউই জানেন না। জীবিত থাকাকালীন কেউই তাকে কোন বিষয়ে চেলেঞ্জ করতে পারেনি।তাকে চেলেঞ্জ করার মত সাহস কারুরই ছিল না। অথচ তিনি ছিলেন একা। সমাজ বিরােধী কাজের জন্য তিনি ছিলেন আপােষহীন লােক।সমাজ বিরােধী, চোরা কারবারীদের বিরাট অংশের নিকট তিনি ছিলেন ত্ৰাস। এত শত্ৰু চারদিকে থাকা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন নির্ভীক ভয় ভাবনা তাঁর ছিল না।জীবিত থাকাবস্থায় তার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব কোথাও কখনও খর্ব হয়নি।

সৈয়দ মােহাম্মদ ইসহাক (রহ:) একজন আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বই ছিলেন না একই সাথে তিনি রাজনৈতিক দিক দিয়েও ছিলেন অত্যন্ত দূরদর্শী ও বিচক্ষণ ব্যক্তি।কোন সভায় বক্তৃতা দিলে সবাই মনােযােগ দিয়ে বক্তব্য শুনতে থাকে। তার বাচনভঙ্গী, ভাষার লালিত্য চমকার।তার পাণ্ডিত্য পূর্ণ বক্তব্যে সভাস্থলে আলােড়ন সৃষ্টি হত।সারগর্ভ বক্তব্য শুনে মানুষ আশ্বস্ত হয়ে যেত।সৈয়দ মােহাম্মদ ইসহাক (রহ:) বাংলা, ইংরেজি ছাড়াও উর্দু, হিন্দী, ফার্সী ভাষায় কথা বলতে পারতেন।সমাজসেবক এই সৈয়দ সাহেব তাঁর জীবদ্দশায় শাহজী বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সহ অত্র এলাকায় অনেক ইমামবাড়া,মসজিদ,হাইস্কুল ইত্যাদি ধর্মীয় ও সেবামুলক প্রতিষ্ঠান স্থাপনে অগ্রনী ভুমিকা রেখেছিলেন। সৈয়দ মোঃ ইসহাক সাহেব মুসলিম লীগের স্বক্রিয় ও অন্যতম একজন নেতা ছিলেন। তৎকালে সিলেটের সকল সম্ভান্ত পরিবারই পাকিস্তান মুসলিম লীগের সদস্য ছিলেন।ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৭ সালে সিলেটকে ভারতের অধীনস্থ করায় তীব্র প্রতিবাদী আন্দলনের তিনি সক্রিয় নেতা ছিলেন। সে সময় সিলেটের অধিবাসীদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ছিল হিন্দু। সৈয়দ মােঃ ইসহাক সিলেটকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মুসলিম লীগের পক্ষে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন।

সৈয়দ মােহাম্মদ ইসহাক (রহ:) জীবনে এলাকার অসংখ্য সামাজিক বিচার সালিশ করে নিরপেক্ষতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।সমাজের যে কোন জটিল কলহ বিবাদের সুষ্ঠু ও সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত প্রদানে তিনি ছিলেন অদ্বিতীয়।সাহেব বাড়ির সামনে আটাশ গ্রামের বিচার সালিশি হতাে। যে মামলা কোর্ট কাছারীতে আপোষ হয়না সে মামলাও তিনি অবলিলায় নিস্পন্ন করে দেন যেখানে উভয় পক্ষই আনন্দ চিত্তে তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। লােক‑মুখে শােনা যায় যে, তাঁর তরিৎ সিদ্ধান্ত দানের ক্ষমতা ছিল অকল্পনীয় ।তাঁর বিচক্ষণতা ও কঠোর নিরপেক্ষতাই সকলের নিকট তাঁকে গ্রহনযোগ্য করে।যত বড় সমস্যাই হউক না কেন তার নিকট এলে একটা সুরাহা হয়ে যেত। আশপাশের মানুষ বিপদে-আপদে তার থেকে বুদ্ধিপরামর্শ নিয়ে উপকৃত হতাে। এমন ধরনের নিঃস্বার্থ সমাজকর্মী আজকের যুগে বিরল বলে মন্তব্য করেন অত্র এলাকার কিছু মান্য ব্যক্তিবর্গ।একটি মানুষ কতটা সৎ হলে এমন আস্থা অর্জন করতে পারে তার উদাহরনও তিনি নিজেই। প্রায় সময়ই (সুতাং) শাহজী বাজারে মারামারি হতাে। কোন সামাজিক সামান্য ঘটনার জের বাজারে এসে প্রকান্ড আকার ধারণ করে এক গ্রাম অন্য গ্রামের সাথে মহা সংঘর্ষে জড়িয়ে খুন‑খুনি হয়ে যেতাে। এমতাবস্থায় যদি সৈয়দ মােঃ ইসহাক (রহ:) দূর হতে কেবল হাত উঠাতেন এমনিই মারামারি বন্ধ হয়ে যেত। এমনই ছিল তার মানুষের উপরে প্রভাব।সৈয়দ মােহাম্মদ ইসহাক (রহ:) অত্যান্ত পরিস্কার চলাফেরা করতেন । মানুষের সাথে তার ব্যাবহার ছিল অতি সাধারণ। মানুষ হিসেবে মানুষের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য তিনি যথাসম্ভব বাড়ি বাড়ি গিয়ে পালন করতেন। পুরো বাংলাদেশে তার যত প্রিয়জন আপনজন ছিলেন তাদের কথা মনে হলে তিনি স্বশরিরে উপস্থিত হয়ে খোঁজখবর নিতে চলে যেতেন, সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য সহযোগীতাও করতেন। তিনি শিকার করতে খুব পচন্দ করতেন তাই মাঝে মাঝে তিনি পাহাড়ে বা গহীন জংলায় হরিণ শিকারে যেতেন। তার শিকারের অনেক গল্প লােকমুখে শােনা যায়।

সৈয়দ মােঃ ইসহাক রহ: সময় কেবল বিরাট জ্ঞানভাণ্ডারেরই অধিকারী হন নি, একই সাথে তিনি সমকালীন প্রথম কাতারের কবিদের অন্যতম হিসেবেও পরিগণিত হতেন। তাঁর মধ্যে লুকিয়ে ছিল বহু সুপ্ত প্রতিভা। ছাত্রজীবনে তিনি একাধিক মাসিকপত্রে লেখালেখির সাথে জড়িত ছিলেন। তার রচিত শতাধিক উর্দু ও বাংলাভাষায় রচিত কাছিদা, গজল, আধ্যাত্মিক গান,মহরমের জারী-মর্সিয়া রয়েছে। সেগুলাে আশেকের আত্মার খোরাক হিসেবে সমাদৃত। তিনি একজন সঙ্গীত অনুরাগী ছিলেন। নিজেও ভাল গাইতেন। হারমােনিয়াম, বেহেলা, সরােদ, দোতরা, ঢােলক, সেতার, বাঁশী তিনি বাজাতে পারতেন। প্রায় সময়ই তিনি এ সব বাদ্যযন্ত্রে মনােযােগ দিয়ে সঙ্গীতের মাধ্যমে ঐশী প্রেমে বিভাের হয়ে যেতেন। এ সকল যন্ত্র তিনি নিজে নিজে চর্চা করে শিখেছেন। তাঁর কোন ওস্তাদ ছিল বলে শােনা যায় না।এ সকল যন্ত্র বাজানাে দেখলে উপায় ছিল না বলার যে তিনি ওস্তাদ ছাড়াই শিখেছেন। এমনিই প্রতিভা ছিল তার। সঙ্গীতের মাধ্যমে ঐশী প্রেমে বিভাের হয়ে তিনি চলে যেতেন সসীম থেকে অসীমের মাঝে। ভক্ত মুরিদান মহল যখন আসতেন বা তিনি যখন মুরিদানে যেতেন।তখন বাদ্যযন্ত্রের তালে আল্লাহু জিকিরে আকাশ‑বাতাস মুখরিত হয়ে উঠতাে।সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক রহ: পাকপাঞ্জাতনের প্রতি খুবই উদ্ৰগীব, উৎসাহিত প্রাণ ছিলেন। পাক পাঞ্জাতনের মহান আদর্শের ভাব মূৰ্ত্তি জনসমাজে জাগ্রত রাখার উদ্দেশ্যে তিনি জীবন কাজ করে গেছেন। তিনি আহলে বায়াতের শান ও মান প্রচারে মনােনিবেশ করলে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে মানুষ তার হাতে বায়াতে রাসূল গ্রহন করতে শুরু করে।দেশ‑বিদেশে উনার লক্ষ লক্ষ ভক্ত‑মুরিদান রয়েছে।

সৈয়দ মােঃ ইসহাক (রহ.) প্রচারবিমুখতা মানুষ ছিলেন।তার এর প্রচারবিমুখতা, এ আধ্যাত্মিক মনীষীর চরিত্রগত একটি সুন্দর দিক।হাজার হাজার যার অনুসারী (মুরিদ) তাতে তার মাঝে অহঙ্কারের রেশ আসা স্বাভাবিক হলেও তিনি তা কখনও দাবি করেননি বা ঘোষণা দেননি।লৌকিকতা ও জৌলুশকে প্রচন্ড ভাবে ঘৃণা করতেন। এ দেশে ভিআইপি হিসেবে আমরা যাদের জানি তাদের দুয়ারে কখনও হাজির হননি। বরং তাদের কেউ কেউ এসেছেন নিজস্ব প্রয়োজনে তার কাছে, পরামর্শ ও দোয়ার জন্য। তিনি এ সুযোগে তাদের চরিত্র সংশোধনের আহ্বান জানাতেন।তিনি কথা বলতেন মুল্যবান, আপন মানুষের মত। হেদায়েত পাওয়া যেত তার কথায় পরামর্শে ।তিনি সারা জীবন ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিত ছিলেন। ৪০ বছর পর্যন্ত দেশের গ্রাম‑গঞ্জে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ইসলাম কাজ করেছেন।তিনি একটু ভিন্ন মেজাজে ইসলামের সমসাময়িক গুরুত্বপুর্ন বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে আলোচনা করতেন।পারহেজগারি,নামাজে পাবন্দী, ইশকে রাসুল চরিত্রের,সততা, মুসলমানদের সামাজিক দায়িত্ব কর্তব্য এই সকল বিষয়কে গুরুত্ব দিতেন।তার আলোচনায় শুদ্ধ্ উচ্চারন সহজ সরল বচন মানুষকে ভিষণ আকর্শন করত ফলে সবাই তার কথা মন দিয়ে শুনতো।তিনি যখন নামাজে ইমামতি করতেন তাঁর কোরআনুল করিমের তিলাওয়াত এত দরাজ ছিল এত শ্রুতিমধুর ছিল কল্পনাতীত । তেলাওয়াতের সূর ছিল বেহেশতি। বড় দরাজ করে তিলাওয়াত করতেন।সব সময় ব্যাস্ত থাকতেন কোরআন মজিদ তিলাওয়াতে অথবা নামাযে দণ্ডায়মান কিংবা কিতাব পড়ায় মগ্নচৈতন্য ।নামাজের মোসল্লায় বসে এক পা উঠিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করতেন,সেজদায় ঘন্টার পর ঘন্টা থাকতেন দুপ্রহর,বিকেল, সন্ধ্যাকাল,রাত,গভীররাত সবসময়।এক আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্যেই নিয়োজিত ছিলেন চিরজিবন আল্লাহর তার রাসুল (সা.) ও আহলে বাইত (আ:) এর সন্তোষ্টি ছিল তার জীবনের মোকসুদ।

সৈয়দ মােঃ ইসহাক (রহ.) ইসলামী চিন্তাবিদ এবং গবেষক ছিলেন । গুরুগম্ভীর ব্যক্তিত্বের অধিকারী এই বাগ্মী পুরুষ একজন ইংরেজী, আরবী, উর্দু ও ফারসী ভাষায় উচ্চ শিক্ষিত আলেম ছিলেন। জীবনের অন্তিমকাল অবদি আরবী, উর্দু, ফারসী ও ইংরেজী ভাষায় ইসলাম ধর্মীয় জটিল তত্ত্বসমূহের গবেষণার কাজ চালিয়ে গেছেন।। আরবি ও ফার্সিতে লিখিত অনেক মুল্যবান কিতাবাদী নিয়ে তিনি গবেষণা করতেন। সারাটি জীবন অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি কঠোর সাধন করে গেছেন।তাঁর লেখা কয়েকখানা ইসলামি পুস্তক রয়েছে। কোরআন- হাদীস হতে তিনি অমূল্য তথ্য সহ পাকপাঞ্জাতন ও শহীদানে কারবালার উপর অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রেখে গেছেন। মহান মনীষী সৈয়দ মােঃ ইসহাক (রহ.) অনেক মহামূল্য চৈন্তিক ও লেখ্য উত্তরাধিকার রেখে গেছেন যার প্রতিটিই তাঁর মনীষা ও বিরাট ব্যক্তিত্বের পরিচয় বহন করে এবং তা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তাঁকে মানুষের মাঝে স্মরণীয় করে রাখবে। সারা জীবনের গবেষণার ফসল “নবী বংশ (পাক পাঞ্জাতন) ও মহান কোরবানী” গ্রন্থটি তার মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হওয়ার পরপরই চারদিকে সারা পড়ে যায়। তাছাউফ পন্থীরা বিভিন্নভাবে বইখানা সংগ্রহ করছেন। তাছাড়া ইরান দূতাবাস প্রচুর বই খরিদ করে নেয়। এই কিতাব ছারাও তাঁর আরও কিছু অপ্রকাশিত লেখা তাঁর পরিবারে সংরক্ষিত আছে। মহান মনীষী সৈয়দ মােঃ ইসহাক আল্ হোসাইনী(রঃ) ছিলেন এমন একজন মহান ব্যক্তিত্ব যিনি স্বীয় মহামূল্য জীবনকে পাক পান্জাতনের তরে মুসলমানদের সর্বজনীন কল্যাণের জন্য ওয়াক্বফ্ করে দিয়েছিলেন। যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন তাঁর জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব, তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব, মহত্ব ও খ্যাতি সকলের চক্ষু-কর্ণকে পূর্ণ করে রেখেছিলো। কালের প্রবাহ তাঁর নূরানী যিন্দেগীর পৃষ্ঠা উল্টে সামনে এগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এ মহান অলির ‘ইলমের খাতা, রচনাবলী, জনকল্যাণমূলক কাজ এবং আল্লাহ্ তা‘আলার ও দ্বীনের পথে তাঁর খেদমত এখনো একইভাবে উন্মুক্ত রয়েছে।

ইলমী জগতের এ মহান প্রদীপ ৬ ই ফেব্রুয়ারি,১৯৮৮ ইং/২২ শে মাঘ ১৩৯৪ বাংলা তারিখে নির্বাপিত হয়ে হায়াতে জিন্দেগী থেকে পর্দা করে মহান আল্লাহর দিদারে চলেযান। যে হস্তদ্বয় চিরদিন সত্যের প্রতিরক্ষায় ও বাতিলের অপসারণের কাজে মশগুল ছিলো তা কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং যে সব অঙ্গুলি লেখনী ধারণ করে বহু মহামূল্য ও বিরলদৃষ্টান্ত গ্রন্থ উপহার দিয়েছে তা নিথর হয়ে পড়ে।পুরু এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তার জীবনদর্শায় অসিয়ত করেছিলেন, যথাসম্ভব দাফন কার্য তারাতারি সম্পন্ন করতে।বলে গিয়েছিল্ন পরিবারের কে তার জানাযায় অংশগ্রহন করতে পারবে,কে পারবে না।মওতকালে ছোট্ট আলামত(ভূমিকম্প) হবে ও দাফন কার্য সম্পন্নের পরে আবার ছোট্ট আলামত(ভূমিকম্প) হবে।এতে যেন কেউ ভয় না পায়। যা যা বলেছিলেন ঘটেছিলও তাই।সেই ঘটনা এখনও লোকমুখে ফেরে,পরপর দুদিন ভূমিকম্পের ঘটনা সে সময় পত্রিকাতেও এসেছিলো।

হবিগঞ্জের নুরপুর গ্রামের মরহুম জনাব আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী আকবর মংলা মিয়া সাহেব দীর্ঘ দিন সৌদি আরবে বাংলাদেশ এমবেসিতে কাজ করেছেন।সে সুবাদে প্রায় প্রতি বছরই হজ্জ পালন করতেন।তিনি সৈয়দ মোঃ ইসহাক (রহ.) এর একনিষ্ট ভক্ত ও মুরিদ ছিলেন।তিনি হযরতের (সৈয়দ মোঃ ইসহাক (রহ.) হায়াতে জিন্দেগী থেকে পর্দা করার সমকালীন সময়ে(অর্থাৎ পর্দা নেয়ার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই) পবিত্র মক্কা নগরিতে হজ পালনের জন্য মিনায় অবস্থান করছিলেন।যখন তিনি কাবাগৃহের চর্তুদিকে তাওয়াফরত ছিলেন তখন তার পীর সৈয়দ মোঃ ইসহাক (রহ.) এর সাথে দেখা হয়ে যায় এবং তিনি সালাম দিলে সালামের উত্তরও পান।তাওয়াফ কালীন সময়ে ভীড়ের কারনে দুজনের মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় এক সময় পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান।পরবর্তিতে তিনি অনেক খুজাখুজি করেও হযরতের কোন সন্ধান বেড় করতে পারেননি।তিনি আশা করেছিলেন এইবার একসাথে পবিত্র হজ শেষে দেশে ফিরবেন কিন্তু তা হল না। বিষন্ন মন নিয়ে দেশে ফিরে তার পরিবারকে জিজ্ঞাসা করলেন কেন তাকে পীরসাহেব হজে গেছেন জানানো হল না। পরিবারের লোকজন অবাক হয়ে বললেন এটা কিভাবে সম্ভব!? তিনি তো কিছুদিন আগেই পর্দা নিয়েছেন! তাছাড়া আরও বহু কারামতের কথা লোকের মুখে মুখে এখনও প্রচলিত আছে।আল্লাহর অলীদের কারামত সংঘিটত হওয়ার মাঝে অনেক কল্যান ও হিকমত লুকায়িত থাকে।

হযরত সুফি সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক‑আল্ হোসাইনী (রহ:)’র জানাজার শেষে সুরাবই সাহেব বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা হযরত শাহ কারার ফুলশাহ মগফুর (রহ) এর দরগাহের কদম মোবারক বরাবর সমাদিত করা হয়।প্রতি বছর ২২ শে মাঘ বাংলা তারিখে তাঁর উরস শরীফ পালিত হয়।২দিন ব্যাপী,লাখ লাখ ভক্তবৃন্দের সুগমনে অনেক সুন্দর,সুষ্ঠ, নিরাপদ ও পবিত্রতার মধ্যদিয়ে অনুষ্টিত পবিত্র বাৎসরিক ওরশ মোবারক।২দিন ব্যাপী পবিত্র ওরশ মোবারকে মাজার শরীফ গোসল, গিলাপ ছড়ানো,যিয়ারত,মিলাদ‑মাহফিল যিকির ‑শ্যামা মাহফিল, মোনাজাত এবং তবারক বিতরণের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় ঐতিহাসিক এই ওরশ মোবারক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ প্রশাসনের সাথে দরবারের স্বেচ্ছাসেবকদল,দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত কয়েক লক্ষাধিক নবী প্রেমিক মুরিদান, ভক্ত ও অনুসারীদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত ওরছ শরীফকে সফল করার জন্য সকল আয়োজন সম্পন্ন করে থাকে।


সিপাহসালার ইনস্টিটিউশন | জানুয়ারি ২০১৯এস এইচ হক

মন্তব্য

  • […] মশহুর পীর, ইসলামিক লেখক ও গবেষক সৈয়দ মোহাম্মদ ইসহাক আল হোসাইনী (রঃ) ১৩৩১ বাং, ৩রা কার্তিক হবিগঞ্জ জেলার […]

  • Very infor­ma­tive arti­cle! I appre­ci­ate the depth of analy­sis. If you want to delve deep­er, here’s a help­ful resource: EXPLORE FURTHER. Eager to hear every­one’s thoughts!

  • Arse­nal star drops fresh future hint amid trans­fer uncer­tain­ty Trans­fer Watch, pre­sent­ed by Bar­clays, looks at some incred­i­ble play­ers who joined a Pre­mier League club in the win­ter win­dow Want more trans­fer news? Read Mon­day’s full gos­sip col­umn See today’s front and back pages, down­load the news­pa­per, order back issues and use the his­toric Dai­ly Express news­pa­per archive. It is alleged that Napoli will demand an eye-water­ing £133million for Osimhen, which would shat­ter the £106million Pre­mier League trans­fer record set by Chelsea in Jan­u­ary, when they signed Enzo Fer­nan­dez from Ben­fi­ca. Mon­day 1st Jan­u­ary — Thurs­day 1st Feb­ru­ary at 23:00 GMT Top­ics: Foot­ball, Vic­tor Osimhen, Napoli, Man­ches­ter Unit­ed, Arse­nal, Trans­fers The 101 Great Goals Trans­fer page includes all the lat­est trans­fer gos­sip, rumours and con­firmed moves.
    https://touch-wiki.win/index.php?title=Leeds_on_sky_sports
    ‘They just turn up against Arse­nal!’ When Mykhai­lo Mudryk decid­ed to join Chelsea mid­way through the last trans­fer win­dow, the joke was square­ly on Arse­nal. The league lead­ers had been jilt­ed at the Jan­u­ary altar and oppo­si­tion fans rev­elled in it. Arse­nal open new con­tract talks with key star after stun­ning sea­son Arte­ta issues new ral­ly­ing call to Arse­nal fans ahead of sea­son run-in Copy­right © 2023 Arse­nal Sta­tion — This site is in no way affil­i­at­ed to Arse­nal Foot­ball Club. All views are inde­pen­dent. Online mes­sages urged vio­lent attacks on four match­es, prompt­ing the police in Eng­land, France and Spain to step up pre­cau­tions. ‘They just turn up against Arse­nal!’ THE NOTEBOOK: Arse­nal sealed back-to-back away wins over Tot­ten­ham for the first time in 36 years on Sun­day, beat­ing their arch-rivals 3–2 in the North Lon­don Der­by to stretch their lead at the top.

  • We cre­ate online casi­no games for mobile, both on Android and iOS, and on the web. Our web­site games will be suit­able for var­i­ous web browsers, such as Chrome, Fire­fox, Edge, and more. As afore­men­tioned, casi­no games are in devel­op­ment by dif­fer­ent soft­ware com­pa­nies and then in a sale to online oper­a­tors. What’s the point of hav­ing a web­site if peo­ple can’t find it? At Thrive, we don’t just focus on visu­als but rather we cre­ate a hard-work­ing web­site for your busi­ness. Our Las Vegas web design experts and devel­op­ers ensure your busi­ness web­site is respon­sive and works well with search engines. We ana­lyze and update the struc­ture of your web­site so that it’s both user-friend­ly and SEO-friend­ly. We believe that well-devel­oped gam­bling soft­ware is the back­bone of the online casi­no, and we have been devel­op­ing reli­able and robust online gam­bling soft­ware for sev­er­al years.
    https://vadaszapro.eu/user/profile/1281923
    Live roulette plays the same as all oth­er roulette games. Online roulette may use RNG tech­nol­o­gy, but the live ver­sion will see you play roulette with real deal­ers. French roulette is very sim­i­lar to Euro­pean roulette, with the only dif­fer­ence being two added rules called la partage and en prison. They allow play­ers to receive half of their even-mon­ey bets back when the ball lands on a zero. This fur­ther reduces the house edge and brings it down to just 1.35%, mak­ing French roulette the most advan­ta­geous roulette vari­ant of all. Online roulette oper­ates using RNG soft­ware, unless you decide to play live roulette. The sequences gen­er­at­ed by the pro­gramme cor­re­spond to a ran­dom out­come on the wheel; to this end, the spin­ning roulette wheel on the screen works sim­i­lar to the spin­ning reels in video slots.

মতামত দিন