আজ ৩ জামাদিউস সানী নবীকন্যা সাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামীন হযরত ফাতিমা সালামুল্লাহি আলাইহা শাহাদাত দিবসে সকল আহলে বায়েতের অনুসারীদেরকে জানাই গভীর শোক ও সমবেদনা এবং মহান সত্তার শানে পেশ করছি অশেষ দরুদ ও সালাম।
“ইয়া ফাতেমাতুয যাহরায়ু ইয়া বিন্তা মুহম্মাদিন ইয়া কুর্রাতে আইনির রাসূলি ইয়া সাইয়্যেদাতানা ওয়া মাওলাতানা ইন্না তাওয়াজ্জাহনা ওয়া ওয়াস তাশফা’না ওয়া তাওয়াসসালনা বিকি ইলাল্লাহি, ওয়া ক্বাদ্দামনাকি বায়না য়্যাদায় হাজাতিনা। ইয়া ওয়াযিহাতান ইন্দাল্লাহি ইশফায়ী’লানা ইন্দাল্লাহি।”
|
কালের ঘোলাজলে বিচক্ষণ মাছ শিকারীরা আহলে বাইতের ওপর যেসব রাজনৈতিক কূটচাল চেলে সাময়িক স্বার্থ চরিতার্থ করেছিল, সেই লুকায়িত চরম সত্যকে মা ফাতিমা সালামুল্লাহি আলাইহা আমাদের কাছে শিক্ষাসরুপ উন্মোচিত করে দিয়ে গেলেন তাঁর করুন শাহাদতের মধ্য দিয়ে। আমরা যদি এর মুল কারণ গুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম হই তাহলে মা ফাতিমার (সাঃআঃ) অবস্থা সর্ম্পকে জানতে পারবো এবং রাসুলের আর্দশ রক্ষায় আমাদের দায়িত্ব কি তা চিহ্নিতি করতে সক্ষম হব।
পবিত্র কোরআনে বর্নিত হয়েছেঃ-وأشرقت الأرض بنور ربّها অর্থাৎ,আল্লাহর নুরে জমিন নুরানি হবে। মা জননী ফাতিমা যাহরা (সাঃআঃ) হচ্ছেন আসমানের নুর আর সর্বশেষ বারতম ইমাম মাহদী (আঃ) হচ্ছেন জমিনের নুর।
রাসূল (সাঃ) এ সম্পর্কে বলেছেনঃ-«ثم أظلمت المشارق و المغارب، فشکت الملائکة إلی الله تعالی أنْ یکشف عنهم تلک الظلمة. فتکلم الله جلّ جلالُه کلمةً فخلق منها روحا ثُمّ تکلَّم بکلمةٍ فخلق من تلک الکلمة نورا، فأضاءت النور إلی تلک الروح و أقامها مقامَ العرش فزهرت المشارق و المغارب فهی فاطمة الزهراء و لذالک سمیت الزهراء لأنَّ نورها زهرت به السماوات অর্থাৎ, “হযরত ফাতিমা সালামুল্লাহি আলাইহা কে এই জন্য যাহরা বলা হয়েছে যে, মহান আল্লাহ তাঁর নুরের মাধ্যমে আসমানকে নুরানি করেছেন।”
সূত্রঃ কামালুদ্ দ্বীন খণ্ড‑১, বাব ২৮, হাদীস ১, পৃ.-৫৬৯/ ইসবাত আল‑হুদাত, খন্ডঃ- ২, পৃঃ- ৫৫২।
হযরত ফাতিমা জাহরা সালামুল্লাহি আলাইহা বলেছেনঃ- “আমি হচ্ছি বায়তুল মামুরের মতো,যাহা আসমান বাসিদের কিবলা এবং ফেরেস্তারা যার চত্বরের তাওয়াফ করতে থাকে।”
সূত্রঃ ফাজাইল এ আহলুলবাইত (আ), খন্ড ‑০১ , পৃঃ ২৪৯ , আল কাতরা খন্ড ‑১ পৃঃ ৩৫১/৩৫২।
মহানবীর আহলে বাইত বা পবিত্র বংশ হিসেবে রসুলে খোদার বংশধরকে যে শ্রদ্ধা জানানো হয়ে থাকে তার উৎসধারা ফাতিমা সালামুল্লাহি আলাইহা। নারীর তিনটি রুপ। আল্লাহপাক সেই তিনটি রুপ কেই রহমত হিসেবে প্রেরন করেছেন। প্রথম রুপ কন্যা, তার পিতার জন্য রহমত, দ্বিতীয় স্ত্রী স্বামীর ইমানের সাক্ষ্যদাতা, তৃতীয় মাতা সন্তানের বেহেশত। আহ! কি বলবো মায়ের শান! ফাতেমা এমন পিতার জন্য রহমত হয়ে এসেছেন যিনি নিজেই রহমাতুল্লিল আলামীন! এমন স্বামীর ইমানের সাক্ষ্য দিবেন যিনি নিজেই কুল্লে ইমান! এমন সন্তানের বেহেশত যারা নিজেরাই বেহেশতের সর্দার! (ফেইসবুক আর্টিকেল‑ভাব পাগলা আব্দ্দুল্লাহ) মাওলা মুহাম্মদ (দ:)-এর ১০০% এর ১% হলো নবুয়ত। বাকি ৯৯% এর অংশ মা ফাতিমা (সা.আ.)।রাসূল (সাঃ) বলেছেনঃ “ফাতেমা আমার দেহের (অস্তিত্বের) অংশ। যে কেউ তাকে অসন্তুষ্ট ও ক্রোধান্বিত করলো সে আমাকেই অসন্তুষ্ট ও ক্রোধান্বিত করলো।নিশ্চয় আল্লাহ্ তোমার ক্রোধে ক্রোধান্বিত হন এবং তোমার সন্তুষ্টিতে সন্তুষ্ট হন।”- উক্ত হাদীসটি ‘হাদীসে বিদআ’ নামে প্রসিদ্ধ।
সূত্রঃ ফাতহুল বারি শরহে সহীহ বুখারী- খণ্ড:৭, পৃ:৮৪ বুখারী- খণ্ড: ৬, পৃ: ৪৯১/মুসতাদরাক‑এ-হাকিম- খণ্ড:৩, পৃ:১৫৪ ‚মাজমাউজ জাওয়ায়েদ- খণ্ড:৯, পৃ:২০৩, বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত ও সহীহ বলে গন্য হয়েছে।
ওহীর গৃহে আক্রমনের সূত্রপাত হয়েছিল সেই হিজরতের রজনীতে। মহানবী (সাঃ) এর গৃহে আক্রমন করে বিছানায় শুয়ে থাকা মহানবী (সাঃ) কে হত্যা করবার জন্য কুরাইশ গোত্রের নিয়োজিত খুনীরা নাঙ্গা তরবারী হাতে নিয়ে মোক্ষম সময়ের জন্য অপেক্ষারত। ভোরের আলো ফুটে উঠতেই একযোগে খুনী ঘাতকরা নাঙ্গা তরবারী নিয়ে একত্রে মহানবী (সাঃ) এর গৃহে ঝাপিয়ে পড়ল। জীবনের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছে, সেজন্য আনন্দের কোন কমতি নেই। খুনীর দল মহানবী (সাঃ) এর শয়ন কক্ষে প্রবেশ করে রাসুলের (সাঃ) পরিবর্তে হযরত আলী (আঃ) কে দেখতে পেল তখন খুনীদের সকলেই ক্রুদ্ব ও বিস্মিত হল। রাগে তাদের আপাদমস্তক জ্বলছিল । বাধ্য হয় ব্যর্থ মন নিয়ে ফিরে গেল। কিন্ত প্রতিজ্ঞা করল যে, যে ভাবেই হোক নবীজী (সাঃ) এর অবস্থানস্থল খুজে বের করবেই । (সূত্রঃ তারীখে ত্বাবারী , ২য় খন্ড , পৃ — ৯৭)। মহানবী (সাঃ) এর ইন্তেকালের অল্প কয়েকদিন পরের ঘটনা আবু বকর ইবনে কুহাফা খলিফা পদে বরিত হয়ে হজরত আলী (আঃ) এর বাইয়াত নেওয়ার জন্য লোক পাঠায় কিন্তু হজরত আলী (আ.) অস্বীকার করার ফলে মনে করলেন, হয়ত হজরত আলী (আঃ) ও তদীয় বন্ধুবর্গ এই নির্বাচনে অসন্তুষ্ট হয়ে গােলযােগ সৃষ্টি করে বসবেন। আবুবকর এই আশংকায় তিনি উমর ইবনুল খাত্তাবকে অনুরােধ করলেন যে, আপনি একদল সৈন্যসহ মা হযরত ফাতিমা সালামুল্লাহি আলাইহা’র বাসগৃহ অবরােধ করুন।পরম রাজনৈতিক ওমর তৎক্ষণাৎ একদল সৈন্যসহ উক্ত কাজ সম্পন্ন করেন।যে পবিত্র গৃহে ফেরেশতাগন হরহামেশা বিভিন্ন কাজে যাতায়াত করতেন। নবীজী (সাঃ) এর সেই পবিত্র ওহীর গৃহও আক্রান্ত হল। খলিফা বাহাদুর ঘোষণা দিলেনঃ “আল্লাহর শপথ, যার হাতে ওমরের প্রান, আমি এ ঘর জ্বালিয়ে দেব, যদি না আশ্রয় গ্রহনকারীরা বাইআত হবার জন্য ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে। ওনাকে বলা হল,নবী দুলালী যাহরা (সাঃআঃ) এ ঘরের মধ্যে রয়েছেন, উমর বললঃ তাতে কি! কে ঘরে আছে তা আমার কিছু যায় আসে না। ” খলীফার আজ্ঞাবাহীরা আগুন জ্বালিয়ে দিলেন, গৃহের দরজার ভিতর দাড়িয়েছিলেন মা জননী ফাতিমা (সাঃআঃ), যখন আগুন দ্বারা দরজা জ্বলা শুরু করল তখন সেই দরজা ধরে রেখেছিলেন নবীকন্যা ফাতিমা (সাঃআঃ) যার ফলে যে ফাতিমার কোমল দুই হাতে কব্জি তে রাসুল (সাঃ) চুমু দিতেন সেই দুই হাতের কব্জি তে ছাল‑ক্ষত সৃষ্টি হয়ে গেল। এরপরেও যখন দরজাটি পুরোপুরি খোলা হল না তখন উমরের নির্দেশে বর্শা দিয়ে দরজায় ধাক্কা দেয়া শুরু হল, এদিক দিয়ে তারা ধাক্কা দিচ্ছিলো অন্য পাশে নবীকন্যা ফাতিমা (সাঃআঃ) আটকাচ্ছিলেন সেই দরজার চাপ। অতঃপর পাপিষ্ঠ উমর দৌড়ে এসে সেই দরজার উপর জোরে লাথি মারলো এবং জ্বলন্ত দরজার লোহার অংশ আগুনে গরম হয়ে মা জননী ফাতিমা (সাঃআঃ),বুক ও পাজরের উপর বিধে গেলে পাজরের হাড় ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে গেলেন এবং তার উপর দরজাটি পড়লো। ফলে মায়ের পাঁজর ভেঙ্গে গর্ভস্থিত সন্তানের গর্ভপাত ঘটে।উমর ও উমরের জঙ্গিবাহিনী সেই দরজার উপর ভর দিয়ে ঘরের ভিতর প্রবেশ করল। দরজার নিচে শুয়ে রসুলের অংশ, রসুলের মা চিৎকার করে বলেছেনঃ ও আলী ! আমার মহসীন শহীদ হয়ে গেছে ! ও আলী আমার হাত ভেঙ্গে গেছে ! (সে হাত এমন ভাবে ভেংগেছিলো যে বাকি জীবন জনাবে বতুল ডানহাতে তসবিহ পর্যন্ত টানতে পারেন নাই) ইসলামের নেতাগন ঘর তছনছ করে বেড়িয়ে যাওয়ার পরে ফিজ্জা (ফাতেমার সেবিকা) এসে উম্মে আবিহা কে তোলার পরে মা ফাতেমা বলেন আলী কোথায়? ফিজ্জা কেদে বলে মাওলা কে গলায় রশি বেধে টেনে নিয়ে গেছে। হায় হায়! সেই ঘটনা পরে মা ফাতিমার শরীর মন একেবারেই ভেংগে যায়, এবং আজকের এই দিন মা শাহাদাত বরন করেন। উক্ত ঘটনার পর যতদিন বেঁচে ছিলেন নবীকন্যা ফাতিমা (সাঃআঃ) প্রত্যেক রাতে ও দিনে সর্বদা আবুবকর ও উমরের জন্য আল্লাহর দরবারে বিচার ও নালিশ করতেন এবং শাস্তির দোয়া করতেন। এভাবেই তিনি ভেঙে যাওয়া বুক ও পাজরের হার নিয়ে কিছুদিন এই পৃথিবীর বুকে ছিলেন, তিনি রাতে এক কাত হয়ে ঘুমাতে পারতেন না, ডান হাতে তসবিহ পড়তে পারতেন না, প্রত্যেক শ্বাস নিঃশ্বাস এ তিনি ব্যাথাপীড়া অনুভব করতেন, ইমাম আলী (আঃ) কে তিনি অসিয়ত করেছিলেন তাকে গোসল ও দাফন রাতের আধারে করার জন্য যেন আবুবকর ও উমর তার জানাজাতে অংশগ্রহণ করতে না পারে। বুখারীতে হযরত আয়েশা বর্ণনা করেছেন “নবীকন্যা ফাতিমা ফিদাকের ঘটনার পর আমৃত্যু আবুবকর ও উমরের সাথে কথা বলেন নি ৷ ” ফাদাকের খোৎবা সমাপ্তির পর ফাতেমা বলেছিলেনঃ হায়, যদি এমন জুলুমের স্বীকার হবার পূর্বে মারা যেতাম! হায় মুসিবত! (এহতিজাজ, খন্ড ১, পৃ ১০৭)। যারা আগুন দিয়েছে, লাথি মেরে গর্ভের সন্তান কে হত্যা করেছে তাদের ভয়ংকর ক্ষোভ ছিল মাওলা মুহাম্মদের (সাঃ) উপর। মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) কে বারবার হত্যা করতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে তার কন্যার উপরে শোধ তুলে নিল। এই আচরন যদি অন্য দেশের অন্য ধর্মের কেউ করতো তাহলে হয়তো বলা যেতো যে ওরা প্রতিশোধ নিয়েছে! এরা যে প্রতিশোধ টা নিলো তা কিসের ছিলো?? চিন্তা করে দেখার অনুরোধ রইল।
সূত্রঃ- তারীখে ত্বাবারী , ৩য় খন্ড,পৃ — ২০২ / আহলে সুন্নাহ সূত্রঃ আল ইমামাহ ওয়াল সিয়াসাহ (ইবনে কুতায়বাহ), খন্ডঃ- ০১, পৃষ্ঠাঃ- ৩০, / ইবনে হাজার আল আসকালানী রহ, খণ্ড- ০১, পৃষ্ঠা- ২৬৮ / আল ইমামাহ , ওয়াস‑সীয়াসাহ, ২য় খন্ড , পৃ-১২ / শারহে নাহাজুল বালাঘা , ইবনে আবীল হাদীদ ‚১ম খন্ড , পৃ — ১৩৪ / আলামুন নিসা ‚৩য় খন্ড , পৃ-১২০৫/ আসলু ছুলাইম ‚পৃ- ৭৪ ( নাজাফে মুদ্রিত )/আল মেলাল ওয়ান নেহাল , ২য় খন্ড , পৃ- ৯৫ / ‘নবী বংশ পরিচিতি ও মহান কোরবানি’-সৈয়দ মোঃ ইসহাক আল হোসাইনী (রহঃ) / হজরত আলী মাের্তজা, ২য় সংস্করন মৌঃ সফিউদ্দিন আহমদ পৃঃ ৬৭৬৮/ মাওলানা নুরুদ্দীন, হজরত ওমর পৃঃ ৩৯ / বেলায়েতের দ্যুতি , মূল লেখক — আয়াতুল্লাহ জাফর সুবহানী।
উমর বিন খাত্তাব মাবিয়াকে লিখিত পত্রটির অংশবিশেষ উল্লেখ করছিঃ
“যখন আমি ফাতিমার ঘরের দরজায় আগুন লাগায় তখন ফাতিমা দরজার পিছনে দাড়িয়ে ছিল এবং আমাকে এবং আমার সঙ্গিদেরকে তার ঘরে প্রবেশ করতে দিচ্ছিল না। তখন আমি চাবুক দিয়ে তার বাহুতে এমনভাবে আঘাত করি যে তার হাতে হাতকড়ার ন্যায় দাগ পড়ে যায় তখন সে এমনভাবে উচ্চস্বরে কাঁদতে থাকে যে আমি অনুভব করছিলাম যে আমার অন্তর ধিরে ধিরে নরম হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পরক্ষণেই আমি বদর ও ওহদের যুদ্ধে আলীর হাতে মারা যাওয়া সেই সব ব্যাক্তিদের কথা স্মরণ করি তখন আমার ক্রোধ আরো বৃদ্ধি পায়। তখন আমি ফাতিমার ঘরের দারজায় এমন এক লাথি মারলাম যে উক্ত কারণে ফাতিমার অকালে গর্ভপাত ঘটে। অতঃপর ফাতিমা ক্রন্দন করে বলতে থাকে হে বাবা! হে রাসুল (সা.)! আপনি দেখুন যে আপনার প্রিয় কন্যার সাথে কিরূপ অত্যাচারমূলক আচরণ করা হচ্ছে। অতঃপর সে বলে হে ফিজ্জা! তাড়াতাড়ি আস আমার বাচ্চা মারা গেছে। অতঃপর যখন সে দেয়ালে হেলান দেয় তখন আমি ঘরের মধ্যে প্রবেশ করি। কিন্তু ফাতিমা তারপরেও আমাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে আমি তার গালে এমন এক চড় মারি যে, তার কানের দুল খুলে পড়ে যায়।”
সূত্রঃ বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৩০, পৃষ্ঠা ২৯৩, খন্ড ৮, পৃষ্ঠা ২৩০, রিয়াহিনুশ শারিয়াহ, খন্ড ১, পৃষ্ঠা ২৬৭।
◉কাজি নোমানি মাগরিবি বর্ণনা করেছেনঃ
[عَن أبِی عَبدِاللهِ جَعفَرِبنِ مُحَمَّدٍ الصادِقِعلیهالسّلام عَن أبِیهِعلیهالسّلام: قالَ:]
إنَّ رَسُولَ اللهِصلّیاللهعلیهوآله أسَرَّ إلی فاطِمَةَعلیهاالسّلام أنَّها أولی(أوَّلُ) مَن یَلحَقُ بِهِ مِن أهلِ بَـیتِهِ فَلَمّا قُبِضَ وَ نالَها مِن القَومِ ما نالَها لَزِمَت الفِراشَ وَ نَحَلَ جِسمُها وَ ذابَ لَحمُها وَ صارَت کَالخَیالِ
ইমাম জাফর সাদিক আ. তাঁর পিতার কাছ থেকে বর্ণনা করেছেনঃ রাসূল পাক (সাঃ) ফাতেমাকে চুপিসারে বললেন, তাঁর ওফাতের পর তার আহলে বাইতের মধ্য থেকে সর্ব প্রথম যে তাঁর সাথে গিয়ে মিলিত হবে, সে হল ফাতেমা (সাঃআঃ)। অতঃপর যখন নবী স. মৃত্যু বরণ করলেন এবং তার ঘরে হামলা করে তাকে আহত করা হল, তখন তিনি শয্যাশায়ী হয়ে গেলেন, ক্রমশ দূর্বল হয়ে পড়লেন ও এমন ভাবে শুকিয়ে গেলেন যেন মনে হয়েছিল শুকনো কাঠি হয়ে গেছেন।
সূত্রঃ দায়ায়িমুল ইসলাম, ১/২৩২।
◉শেখ আবু জাফর মুহাম্মদ ইবনে হাসান ইবনে আলী ইবনে হাসান তুসি(রঃ) বর্ণনা করেছেনঃ
وَ المَشهُورُ الَّذِی لاخِلافَ فِیهِ بَـینَ الشِیعَةِ أنَّ عُمَرَ ضَرَبَ عَلی بَطنِها حَتّی أسـقَطَت
শিয়াদের মধ্যে এ বিষয়ে প্রসিদ্ধি রয়েছে ও কোনরূপ মতপার্থক্য নেই যে, ফাতেমার পেটে ওমর এমন আঘাত হেনেছিল যে কারণে গর্ভের সন্তান পড়ে যায়।
সূত্রঃ তালখিছুশ শাফি, ৩/১৫৬।
◉মুহাম্মদ ইবনে জারির ইবনে রুস্তম তাবারি (মৃ: চতূর্থ হিজরি) বর্ণনা করেনঃ
فَلَمّا قُبِضَ رَسُولُ اللهِصلّیاللهعلیهوآله وَ جَری ما جَری فِی یَومِ دُخُولِ القَومِ عَلَیها دارَها وَ إخراجِ ابنِ عَمِّها اَمِیرِالمُؤمِنِینَ علیهالسّلام وَ ما لَحِقَها مِن الرَجُلِ أسـقَطَت بِهِ وَلَداً تَماماً وَ کانَ ذلِکَ أصلَ مَرَضِها وَ وَفاتِها.
নবী (সাঃ) ইন্তেকাল করলেন, তারপর যেদিন ফাতেমার ঘরে হামলার ঘটনা ঘটল, আমিরুল মুমিনিনকে জোরপূর্বক বের করে আনা হল এবং ঐ পুরুষের দ্বারা যে বালা হযরত ফাতেমা সাঃআঃ উপর আসল, যে কারণে তাঁর গর্ভের পূর্ণ ছেলে-সন্তানের গর্ভপাত ঘটল। আর এটাই ছিল তাঁর অসুস্থতা ও মৃত্যুর মূল কারন।
সূত্রঃ দালায়েল উল ইমামাহ/২৭।
◉আল্লামা হিল্লি (মৃ: ৭২৬ হি.) বর্ণনা করেনঃ
وَ ضُرِبَت فاطِمَةُعلیهاالسّلام فَألقَت جَنِیناً اسمُهُ مُحسِنٌ
হযরত ফাতেমা সাঃআঃ কে এমন আঘাত হানা হল, যে কারণে তার গর্ভের সন্তান ‘মোহসেন’ পড়ে গেল।
সূত্রঃ শারহুত তাজরিদ/৩৭৬।
◉মুহাম্মদ ইবনে জারির ইবনে রুস্তম তাবারি (মৃ: চতূর্থ হিজরি) বর্ণনা করেনঃ
[عَن أبِیبَصِیرٍ عَن أبِی عَبدِاللهِعلیهالسّلام: قالَ:]
وَ کانَ سَبَبُ وَفاتِها أنَّ قُنفُذاً مَولی عُمَرَ لَکَزَها بِنَعلِ السَیفِ بِأمرِهِ، فَأسـقَطَت مُحسِناً وَ مَرِضَت مِن ذلِکَ مَرَضاً شَدِیداً
ইমাম আবু আব্দিল্লাহের কাছ থেকে আবু বাছির বর্ণনা করেছেন : ওমরের নির্দেশে তার ভৃত্য ‘কুনফুয’ তরবারির গিলাফ দিয়ে ফাতেমাকে আঘাত হেনেছিল, যে কারণে মুহসিনের গর্ভপাত ঘটে এবং সে কারণেই ফাতেমা আ. মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সূত্রঃ দালায়েল উল ইমামাহ/৪৫।
◉কাফয়ামি (মৃ: ৯০৫ হি.) বর্ণনা করেছেনঃ
إنَّ سَبَبَ وَفاتِهاعلیهاالسّلام هُوَ أنَّها ضُرِبَت وَ أسـقَطَت.
নিশ্চয় ফাতেমার মৃত্যুর কারণ হল: তিনি আঘাত প্রাপ্ত হলেন ও তাতে গর্ভপাত হল।
সূত্রঃ মেসবাহ/৫২২।
◉তাবারসি বর্ণনা করেনঃ
وَ حالَت فاطِمَةُعلیهاالسّلام بَـینَ زَوجِها وَ بَـینَهُم عِندَ بابِ البَیتِ فَضَرَبَها قُنفُذٌ بِالسَوطِ عَلی عَضُدِها، فَبَـقِیَ أثَرُهُ فِی عَضُدِها مِن ذلِکَ مِثلَ الدُملُوجِ مِن ضَربِ قُنفُذٍ إیّاها فَأرسَلَ أبوبَکرٍ إلی قُنفُذٍ إضرِبها، فَألجَـأها إلی عِضادَةِ بَـیتـِها، فَدَفَعَها فَکَسَرَ ضِلعاً مِن جَنبِها وَ ألقَت جَنِیناً مِن بَطنِها، فَلَم تَزَل صاحِبَةَ فِراشٍ حَتّی ماتَت مِن ذلِکَ شَهِیدَه …
হযরত ফাতেমা তাঁর স্বামি ও আক্রমনকারী ব্যক্তিদের মাঝে দাড়িয়ে প্রতিরোধ করেছিলেন, তখন ‘কুনফুয’ ফাতেমার উরুতে এমন আঘাত হানল যে, তার দাগ বেন্ডেজের আকার ধারণ করল। আবুবকর কুনফুযকে ফাতেমাকে মারার জন্য পাঠিয়েছিল! তাই কুনফুয ফাতেমাকে ঘর থেকে আছার দিয়ে ফেলে দিল, তখন তাঁর উরুর হাড় ভেঙ্গে গেল ও পেটের সন্তানের গর্ভপাত ঘটল। অতঃপর দীর্ঘ শহ্যাশায়ী হল এবং সে অবস্থাতেই শহীদি মৃত্যু বরণ করলেন।
সূত্রঃ এহতেজাজ, ১/৮৩ ।
আপনার ঘরে আগুন দেয়া হলে আপনার গর্ভের বাচ্চাকে লাথি মেরে হত্যা করা হলে, আপনার পাঁজর ও হাত ভেঙ্গে ফেললে কি আপনি অসন্তুষ্ট হবেন? বুখারী ও মুসলিম সাহেব বলেছেন যে ফাতেমা সাঃ আঃ এর অসন্তুষ্টি তে আল্লাহ্ অসন্তুষ্ট হোন। তাহলে নিমকহারামের দল কাকে সন্তুস্ট করতে তার গৃহে আক্রমন করেছিলো? সেই ঘর যেখানে জিবরাইল এসেছেন মিসকিন হয়ে! যেখানে মিকাইল এসেছেন চাক্কি পিষতে! যেই ঘরের মর্যাদা সম্পর্কে মাওলা মুহাম্মদ নিজে বলেছেন যে এই ঘর নবীদের ঘরের চেয়েও উত্তম! যে ঘর সম্পর্কে হাদিসশাস্ত্রবিদরা উল্লেখ করেছেনঃ যখন এই পবিত্র আয়াত নবী (সাঃ) এর উপর অবতীর্ণ হয়ঃ “ফি বুয়ুতিন আজেনাল্লাহো আন তুরফায়া ওয়া য়ুজকারা ফিহাসমুহু ইউসাব্বিহু লাহুফিহা- বিলগুদুওবি ওয়াল আসাল।”-(সুরা নূর- আয়াত ৩৬।) নবী করীম এই আয়াতটি মসজিদে তেলাওয়াত করলেন সেই সময় এক ব্যক্তি উঠে প্রশ্ন করলেনঃ হে মহানবী (সাঃ) এই ঘরগুলি বলতে ও তার গুরুত্ব বলতে কি বোঝায় ? (অর্থাৎ: কোন ঘর ও তার কি গুরুত্ব) ।রাসূল (সা.) বললেনঃ নবীগণের গৃহগুলিকে বোঝানো হয়েছে।তখনি হজরত আবুবকর উঠে হজরত আলী (আ.) ও ফাতিমা (সাঃ আঃ) এর গৃহের দিকে ইশারা করে বললেনঃ আচ্ছা এই গৃহ কি সেই গৃহের মধ্যে আছে ? উত্তরে নবী করীম (সা.) বললেনঃ হ্যাঁ, বরং তাদের থেকেও উত্তম। (দূররে মনছুর- খণ্ড:৬ ‚পৃ:২০৩ ; তাফসিরে সুরা নূর। রুহুল মায়ানী- খণ্ড:১৮ ‚পৃ:১৭৪।) সেই ঘরকে কেমন অসন্মান করা হয়েছে ! অথচ মুমিনের কর্তব্য ছিলো সেই ঘরের প্রতি সর্বোচ্চ সন্মান প্রদর্শন করা। যে ঘর আল্লাহর নূরের কেন্দ্র এবং আল্লাহ যাকে সম্মান করার আদেশ দিয়েছেন তার সাথে অত্যন্ত সম্মান ও ভদ্রতার সঙ্গে আচরণ করা আবশ্যক।হায় নিকৃষ্ট! হায় জঘন্য! ক্ষমতালোভী হারামীরা সেই গৃহের মর্যাদা তো দিলোই না, আমার মাওলার একমাত্র সন্তান যাকে তিনি কখনই মা ছাড়া ডাকেননি, যাকে তিনি উম্মে আবিহা বলেছেন তাকেও সেই নাজায়েজ মুসলিম নামধারী হন্তকের দল এভাবে আক্রমণ করলো! নবী করীম (সা.) দীর্ঘ নয় মাস পর্যন্ত নিজের কন্যার বাড়ি এসে তাঁর ও তাঁর স্বামীর উপর সালাম করতেন এবং সুরা আহযাব: ৩৩ নং إ ِنَّمَا يُرِيدُ اللَّـهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا আয়াতকে তেলাওয়াত করতেন। (দূররে মনছুর- খণ্ড: ৬,পৃ: ৬০৬।) সেই ঘরের সাথে এমন আচরণ! সেই ঘরের বাসিন্দা যারা প্রত্যেকেই মাওলা মুহাম্মদের প্রাণস্বরূপ, তাদের সাথে কি ব্যবহার করলো! হায় হায়! মাওলা মুহাম্মদ সঃ দোয়া করার সময় প্রায়ই ফাতেমা যাহ্রা (সাঃআঃ) কে বলতেনঃ “ফাতেমা আমি দোয়া করি তুমি আমিন বলো” মাওলা মুহাম্মদ এর দোয়া যার আমিনের মুখাপেক্ষী তার নাম ফাতেমা। সেই ফাতেমা কে নির্মমভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।(হুবহু কপি ফেইসবুক আর্টিকেল‑ভাব পাগলা আব্দ্দুল্লাহ।)
বিশ্বনবী (সা.) ও তাঁর পবিত্র বংশধর ও বিশেষ করে ফাতিমা (সা)’র প্রতি অশেষ দরুদ ও সালাম পাঠানোর পাশাপাশি সবাইকে আবারও শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি আজকের এই গভীর শোকের দিনে। হজরত ফাতেমা যাহরা (সা.) এর লিখিত এবং মৌখিক ওসিয়তও ছিল। যা তিনি তাঁর জিবনের অন্তিম সময়ে হজরত আলি (আ.) কে বলে যান।হযরত ফাতিমা জাহরা (সা. আ.)’র একটি বক্তব্য ও দোয়া তুলে ধরে শেষ করব আজকের এই আলোচনা।
হযরত ফাতিমা সালামুল্লাহি আলাইহাʼর অসিয়াতনামাঃ
ইমাম আলী (আঃ) হযরত ফাতেমার (আঃ) মাথা কোলের মধ্যে আকঁড়ে ধরে বললেনঃ হে ফাতেমা তোমার অসিয়াত কর। তুমি যা কিছু অসিয়াত করবে আমি সবই পালন করবো । ফাতেমা (আঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুলের চাচাতো ভাই আল্লাহ তোমাকে অনন্ত কল্যাণ দান করবেন। আমার দৃষ্টিতে অন্যান্যদের তুলনায় আপনি হচ্ছেন উত্তম। আমার মৃত্যুর পরে আপনিই আমাকে গোসল, হুনুত, কাফন এবং দাফন করবেন।যারা আমার প্রতি জুলুম করেছে, আমার অধিকার হরণ করে নিয়েছে তারা যেন আমার গোসলের সময় বা জানায়ায় অংশগ্রহন না করেন। কেননা তারা আমার পিতা ও আমার শত্রু । তাদের কেউই যেন আমার জানাযার নামাযে উপস্থিত না হয়। শুধু তারাই নয় বরং তাদের অনুসারী ও সহকারীও যেন না আসে।আমার জানাযার নামাজ আপনি পড়াবেন। আমার দেহকে আপনি রাতের অন্ধকারে দাফন করবেন। (এখানে সময়ের অভাবে সংক্ষিপ্ত আকারে অসিয়াত নামাটি আনা হয়েছে)
সূত্রঃ বিহারুল আনোয়ার, ৪৩ খন্ড, ১৯ নম্বর পৃষ্ঠা, ২০ নম্বর হাদীস/ বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৭৯, পৃষ্ঠা ২৭ /রওযাতুল ওয়ায়েযিন, পৃষ্ঠা ১৩০, কাশফুল গুম্মা, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ৬৮।
ইমাম জাফর সাদিক (আ.) হজরত ফাতেমা যাহরা (সা.আ.) এর ওসিয়ত সম্পর্কে বলেনঃ হজরত ফাতেমা যাহরা (সা.আ.) হজরত আলি (আ.)কে ওসিয়ত করেন আমার মৃত্যু সম্পর্কে আপনি শুধুমাত্র উম্মে সালমা (রা.), উম্মে আয়মন (রা.), আমার দাসি ফিজ্জা, আমার দুই সন্তান হাসান ও হুসাইন (আ.), আব্বাস, সালমান, আম্মার, মেকদাদ, আবু যার, হুযাইফা (রা.) ব্যাতিত আর কাউকে অবগত করবেন না। (দালায়েলুল ইমামা, পৃষ্ঠা ৪৪, বিহারুল আনওয়ার, খন্ড ৭৮, পৃষ্ঠা ৩১০)হজরত ফাতেমা যাহরা (সা.আ.) আসমা বিনতে উমাইসকে বলেনঃ আপনি এবং হজরত আলি (আ.) এ দুজনেই আমকে গোসল দিবেন এবং উক্ত কাজে অন্য কাউকে অংশগ্রহণের অনুমতি দিবেন না। (যাখায়েরুল উকবা, পৃষ্ঠা ৫৩,)
লা‘আনাল্লাহু ক্বাতিলি ফাতেমাতিয যাহরা সালামুল্লাহি আলাইহা।
সিপাহসালার| ইনস্টিটিউশন | এপ্রিল ২০২২| এস এইচ হক
— সৈয়দ হোসাইন উল হক
Сувенирная продукция с логотипом и корпоративный мерч на заказ в Москве
https://jutecurve29.bloggersdelight.dk/2024/05/31/%d1%81%d1%83%d0%b2%d0%b5%d0%bd%d0%b8%d1%80%d0%bd%d0%b0%d1%8f-%d0%bf%d1%80%d0%be%d0%b4%d1%83%d0%ba%d1%86%d0%b8%d1%8f-%d1%81-%d0%bb%d0%be%d0%b3%d0%be%d1%82%d0%b8%d0%bf%d0%be%d0%bc-%d0%bd%d0%b0-%d0%b7/
http://ek‑x.ru/
Very well-written and funny! For more information, visit: DISCOVER HERE. Looking forward to everyone’s opinions!
Great article and straight to the point. I don’t know if this is really the
best place to ask but do you people have any ideea where to hire some professional writers?
Thanks in advance 🙂 Escape room
You have observed very interesting points! ps nice site.!
Wonderful article! We will be linking to this great article on our site. Keep up the good writing.
It’s nearly impossible to find knowledgeable people for this topic, however, you seem like you know what you’re talking about! Thanks
I love looking through a post that will make men and women think. Also, many thanks for allowing me to comment.
It’s difficult to find educated people about this topic, but you seem like you know what you’re talking about! Thanks
I couldn’t resist commenting. Exceptionally well written!
You made some really good points there. I checked on the internet for more info about the issue and found most people will go along with your views on this site.
This is a topic that is close to my heart… Take care! Exactly where can I find the contact details for questions?
Hi there, I do believe your site could possibly be having internet browser compatibility issues. Whenever I take a look at your site in Safari, it looks fine however, if opening in I.E., it has some overlapping issues. I merely wanted to give you a quick heads up! Aside from that, excellent website.
Your style is very unique in comparison to other people I’ve read stuff from. Many thanks for posting when you’ve got the opportunity, Guess I will just bookmark this site.
After looking into a few of the blog articles on your blog, I seriously like your way of blogging. I book marked it to my bookmark site list and will be checking back soon. Take a look at my web site too and let me know your opinion.
This is a topic which is near to my heart… Many thanks! Exactly where can I find the contact details for questions?
Next time I read a blog, Hopefully it does not fail me as much as this particular one. After all, I know it was my choice to read through, however I genuinely thought you’d have something helpful to say. All I hear is a bunch of crying about something you could fix if you weren’t too busy searching for attention.
Nice post. I learn something new and challenging on sites I stumbleupon on a daily basis. It’s always interesting to read content from other authors and practice a little something from other websites.
That is a really good tip especially to those new to the blogosphere. Brief but very accurate info… Thank you for sharing this one. A must read post.