আজ ৭ ই শাবান কারবালার তরুণ বীর শাহজাদা কাসিম ইবনে হাসান (আ:) এর পবিত্র শুভ বিলাদত শরীফ। ৪৭ হিজরির এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেন কাসিম ইবনে ইমাম হাসান মুজতাবা (আ)। তাঁর জন্ম হয়েছিল ইমাম হাসান (আ)’র স্ত্রী উম্মে ফারওয়ার গর্ভে। ইমাম হাসান (আঃ) এই পুত্রের নাম রাখেন ‘কাসিম’, যার অর্থ বণ্টনকারী।
শাহাদাতের সন্নিকটে ইমাম হাসান (আঃ) ভাই হুসাইন (আঃ)কে বললেনঃ “আমার কাসিম কে আমার কাছে দাও ভাই।” অতঃপর কাসিমের হাতের উপর ইমাম হুসাইনের হাত রেখে বললেনঃ ” ভাই হুসাইন, আমার এই সন্তান কে এতিম মনে করে দূর্বল ভেবোনা, সেও তোমার সাহায্যকারী হবে কারবালার ময়দানে এমন ভাবে নিজেকে কুরবান করবে যা আর কেউ সেভাবে পারবে না।” ইমাম হুসাইন (আঃ) কাসিম কে বুকে জড়িয়ে বললেনঃ “কাসিম তুমি আমারও সন্তান।“এই সময় শাহজাদা কাসিম (আঃ)-এর বয়স ছিল মাত্র ৩ বছর। ইমাম হাসান(আঃ)-এর এতিম পুত্র কে কখনোই এতিম অনুভব হতে দেননি ইমাম হুসাইন(আঃ)।
শাহজাদা কাসিম (আঃ) ছিলেন পিতা ইমাম হাসান (আঃ)-এর সৌন্দর্য্য ও মাধুর্যের জ্বল জ্যান্ত ওয়ারিস, তিনি পিতার সাদৃশ্য ছিলেন এবং ইমাম হুসাইন (আঃ) শাহজাদা কাসিম (আঃ) কে দেখলেই ভাই হাসানের ছেড়ে যাওয়ার দুঃখ ভুলে যেতেন, বলতেনঃ — “আমার ভাই তার বাল্যকালে যেমন ছিল তা দেখতে হলে কাসিম কে দেখে নাও, সে তার পিতার প্রতিচ্ছবি।”
৯ বছর বয়স থেকে শাহজাদা কাসিম(আঃ) চাচা মাওলা আবুল ফযল আব্বাস (আঃ) এবং চাচাতো ভাই মাওলা আলী আকবর(আঃ) নিকট যুদ্ধের কলাকৌশল শিক্ষা নিয়েছেন, খুব কম বয়সী হলেও তিনি এমনভাবে বিষয়টিকে গুরুতর মনে করতেন তা দেখে আহলেবাইত (আঃ) মারহাবা বলতেন। শৌর্য বীর্যবান যুবকের মতই তিনি কলাকৌশল শিক্ষা নিয়ে দাদা মাওলা আলী(আঃ)‘র মত বীরত্ব অর্জন করেন।
আশুরার রাতে ইমাম যখন তাঁর সঙ্গীদের জানিয়ে দিয়েছিলেন যে আগামীকাল আমরা সবাই শহীদ হব, তখন এই তরুণ ভাতিজাও শাহাদতের প্রেমে বিভোর হয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, চাচাজান আমিও কি শহীদ হব? তখন ইমাম পাল্টা প্রশ্ন করেন, শাহাদত তোমার কাছে কেমন মনে হয়? তিনি বলেছিলেনঃ সত্যের পথে শাহাদত মধুর চেয়েও মিষ্টি! খুশি হয়ে ইমাম জানান, হ্যাঁ, তুমিও আগামীকাল শাহাদত বরণ করবে। তিনি শাহাদত বরণ করেছিলেন কারবালার হৃদয়‑বিদারক ট্র্যাজেডিতে। সে সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৪।
কারবালার তরুণ বীর শাহজাদা কাসিম ইবনে হাসান (আ:) পবিত্র বেলাদত দিবস উপলক্ষে সবাইকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন, মোবারকবাদ ও তার মহান সত্তার শানে পেশ করছি অশেষ দরুদ ও সালাম।
আল্লাহুমা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ আত তাইয়েবিন আত তাহেরিন ওয়াল মাসুমিন আল মজলুমিন।
মতামত দিন