প্রবন্ধ

জান্নাতের কাফন

মাওলা মুহাম্মদ সঃ এর কাছে জিবরাঈল আঃ এসেছেন কাফনের কাপড় নিয়ে, উনি তা ভাগ করে এক টুকরা ফাতেমা সাঃ আঃ কে দিলেন, আরেক টুকরা মাওলা আলী আঃ কে দিলেন, আরেক টুকরা মাওলা হাসান আঃ কে দিলেন এবং নিজের জন্য এক টুকরা রেখে দিলেন।

ফাতেমা সাঃ আঃ বললেনঃ “বাবা, আমার হুসাইনের জন্য দিলেন না?” 

মাওলা মুহাম্মদ সঃ কেদে ফেলে বললেনঃ “ফাতেমা, কাফন তাকে পড়ানো হয় যাকে গোসল দেয়া হয়। হুসাইনের মৃত্যু এমন ভাবে হতে যে তাকে গোসল দেয়ার কেউ থাকবেনা, তার দেহে তার মাথা থাকবেনা, দেহ হবে কয়েক টুকরা!” বলতে বলতে চোখের জলে উনার দাড়ি সিক্ত হয়ে যায়।

ফাতেমা সাঃ আঃ ডুকরে কেদে বললেনঃ “বাবা, আপনি আমার সন্তানকে বাচাবেন না !”

মাওলা (সঃ) উত্তর দিলেনঃ “মাগো আমি তখন থাকবোনা।”

পুনরায় ফাতেমা সাঃআঃ জিজ্ঞেস করেনঃ “ওর পিতা? সেতো শেরে খোদা সে তার সন্তান কে রক্ষা করবেনা?”

মাওলা (সঃ) উত্তর দিলেনঃ“আলীও তখন থাকবেনা”।

ফাতেমা সাঃ আঃ এবার দৃঢ় ভাবে বলেনঃ “তাহলে আমি চলে যাবো ময়দানে, আমি রক্ষা করবো আমার হুসাইনকে।”

মাওলা (সঃ) বলেনঃ “তুমিতো আমার পরেই চলে যাবে।”

ফাতেমা সাঃ আঃ ব্যাকুল হয়ে জিজ্ঞেস করেনঃ ‘তাহলে ওর ভাই হাসান, সেতো রক্ষা করবে তাকে!?”

মাওলা জবাব দেনঃ “মা রে ! হাসানও তখন থাকবেনা” 

এবার চিতকার করে কেদে উঠেন ফাতেমা সাঃ আঃ, বলেনঃ “বাবা তাহলে আমার হুসাইনের জন্য কাদবে কে? কে আমার হুসাইনকে মনে রাখবে??”

মাওলা মুহাম্মদ সঃ বলেনঃ “ফাতেমা, আমি দোয়া করি তুমি আমিন বলো, আল্লাহ্‌ দুনিয়াতে এমন একটা কওম সৃষ্টি করবেন যারা কেয়ামত পর্যন্ত আমার হুসাইনের জন্য কাঁদবে, তাকে স্মরন করবে।” উনারা সবাই মিলে মুনাজাত করেন।

এবার ছোট ছোট পায়ে নানা মাওলা মুহাম্মদ (সঃ) এর কাছে এগিয়ে আসেন মাওলা হুসাইন (আঃ), জিজ্ঞেস করেনঃ “নানা যারা আমার জন্য কাঁদবে তাদেরকে আপনি কি দিবেন?

অশ্রুসিক্ত নয়নে নানা (সঃ) বললেনঃ “ আমি তাদের জন্য শাফায়াত করবো।”

এবার মাওলা আলী (আঃ)-এর কাছে গিয়ে জানতে চান হুসাইনঃ “বাবা আপনি কি দিবেন?”

মাওলা আলীর দাড়ি অশ্রুতে ভিজে গেছে,বলেনঃ “আমি কেয়ামতের গরমে তাদের খুজে বেড় করে হাউজে কাওসারের পানি পান করাবো।”

এবার চোট্ট হুসাইন মায়ের কাছে জানতে চানঃ “ মা, আপনি কি দিবেন যারা আমার জন্য কাঁদবে তাদের কে?”

মা ডুকরে কেদে বলেনঃ “হুসাইন আমি জান্নাতের দরজায় এলোচুলে দাঁড়িয়ে থাকবো আর আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করবো ও আমার আল্লাহ্‌! যারা আমার হুসাইনের জন্য অশ্রুপাত করেছে তাদেরকে তুমি আমার আগে জান্নাতে প্রবেশ করাও, নইলে আমি জান্নাতে যাবোনা।”

সবশেষে মাওলা হুসাইন যান ভাইয়ের কাছেঃ “ভাইয়া, আপনি কি দিবেন?” 

মাওলা হাসান তাকে জড়িয়ে ধরে বলেনঃ “ভাই, কেয়ামতের দিন খুব গরম হবে, যারা তোমার জন্য কাঁদবে আমি তাদের জন্য আল্লাহর আরশের ছায়া প্রদান করবো।”

লানতুল্লাহে আলা আদাইহিম আজমাঈন।

—ভাব পাগলা আব্দুল্লাহ


সিপাহসালার | ইনস্টিটিউশন | আগস্ট ২০২০এস এইচ হক

মতামত দিন