প্রবন্ধ

সুন্নতে রাসূলে পাক ( ﷺ)

সুন্নতে রাসূলে পাক (ﷺ)

লেখকঃ-ভাব পাগলা আব্দুল্লাহ।


হাদিসে সাকলাইন নিয়ে অনেকেরই মতভেদ আছে, আমরা বলি মাওলা কোরান আর আহলে বায়েতকে আকড়ে ধরতে বলেছেন। তারা বলেন হুজুর কোরান ও তার (হুজুরের) সুন্নাহ কে আকড়ে ধরতে বলেছেন”। কিছুক্ষনের জন্য আমি তাদের টা ধরেই এগুতে চাই। এবং আলোচনা করতে চাই দুটি অসাধারণ সুন্নতের। আমরা জানি মালা মুহাম্মদ (ﷺ) এর কর্ম পদ্ধতিই সুন্নত হিসেবে পরিচিত। আর তারাও নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন আমলের সুন্নত তরক করার উপায় নেই। আর আমলের মধ্যে দুটি গুরুত্বপুর্ন আমল হলো সালাত, এবং কোরবানী। আসুন রসুল সঃ এর দুটি সিকুয়েন্স তুলে ধরি।

একঃ

একদিন মসজিদে নববীতে জামাতে নামায আদায় করার সময় মহানবীর পাশেই শিশু ইমাম হুসাইন বসেছিলেন। কোন এক রাকাতে মহানবী (ﷺ) সিজদা করার জন্য মাটিতে মাথা রাখলেন। আর তিনি এত বেশী সময় ধরে ঐ সিজদায় ছিলেন যে,মুসল্লীরা মনে করলেন সম্ভবত মহানবীর কিছু হয়েছে অথবা তাঁর ওপর মহান আল্লাহর তরফ থেকে ওহী অবতীর্ণ হচ্ছে। নামায শেষে মহানবীকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন,“না,আমার ওপর ওহী অবতীর্ণ হয়নি। তবে আমার দৌহিত্র (হুসাইন) আমার পিঠের ওপর চড়ে বসেছিল এবং আমি তাকে পিঠ থেকে নামাতে চাচ্ছিলাম না। কারণ আমার ইচ্ছা ছিল,সে নিজেই পিঠ থেকে নেমে আসুক।

সূত্রঃ- ইবনে হাজর আল-আসকালানী প্রণীত তাহযিব আত্-তাহযিব,২য় খণ্ড,পৃঃ ৩৪৬;ফাযায়েলে খামসাহ্,৩য় খণ্ড,পৃঃ ১৯৩।

শরিয়তের হিসাবে আপনি সিজদায় তিনবার, পাচবার, সাতবার খুব বেশি হলে নয়বার সিজদার তসবিহ পাঠ করতে পারবেন, এর বেশি শরিয়তের খিলাফ, মাওলা মুহাম্মদ (ﷺ) সেদিন ৭০ বার সিজদার তসবিহ পাঠ করেছিলেন। তিনি এই সিজদায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নামাজে যদি হুসাইন আঃ চলে আসে তো সিজদা প্রলম্বিত করা সুন্নতে রসুল (ﷺ)। তারা এই সুন্নতটাকে কিভাবে নিবেন?

দুইঃ

হাকিম আন নিশাপুরী এর ’ আল আমালি’-এর সূত্রে নাক্কাশের তাফসির থেকে ইবনে আব্বাসের বর্ণনা এসেছে যে, তিনি বলেছেন, একদিন আমি রাসূল (সা.)‘র সামনে বসা ছিলাম। এ সময় তাঁর ছেলে ইবরাহীম তাঁর বাম উরুর ওপরে এবং ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর ডান উরুর ওপরে বসা ছিলেন। রাসূল(ﷺ) তাঁদের একজনের পর আরেকজনকে চুমু দিলেন। হঠাত জিবরাইল অবতরণ করলেন ওহি নিয়ে। যখন ওহি প্রকাশ শেষ হল তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, ” আমার রবের কাছ থেকে জিবরাইল এসেছিল এবং আমাকে জানায় যে সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে, তিনি এ দুই শিশুকে একত্রে থাকতে দিবেন না এবং একজনকে অপরজনের মুক্তিপণ (বিনিময়) করবেন।”
রাসূল (ﷺ) ইবরাহীমের দিকে তাকালেন এবং কাঁদতে শুরু করলেন এবং বললেন, ” যদি সে (ইব্রাহীম) মারা যায় আমি আর তার মা ছাড়া কেউ বেদনা অনুভব করবে না, কিন্তু হুসাইন হল ফাতিমা এবং আমার চাচাতো ভাই আলীর সন্তান এবং আমার রক্ত‑মাংস। যদি সে মারা যায় শুধু আলী এবং ফাতিমা নয় আমিও ভীষণ ব্যথা অনুভব করব। তাই আলী ও ফাতিমার শোকের চেয়ে আমি আমার শোককে বেছে নিচ্ছি।

দুনিয়ায় এমন কোন পিতা পাবেন না যে তার সন্তানকে রক্ষা করার চেস্টা করবেন না। আরও খোলাখুলি বলতে গেলে আপনার যদি আগেও পুত্র সন্তান হয়ে কিছুদিন পর মারা যায়, এবং অনেকদিন পর আপনি আরেকটা পুত্র সন্তান লাভ করেন তাকে রক্ষা করার জন্য আপনি কি করতে পারবেন? নিজেকে জিজ্ঞেস করে দেখুন! যা উত্তর আপনি পেলেন তা আমি আন্দাজ করতে পারি, কারন আল্লাহ্‌ আমাকেও সন্তান দিয়ে সন্মানিত করেছেন। এখন আরেকটা প্রশ্ন, আপনি কি নিজেকে মাওলা মুহাম্মদ(ﷺ) এর চেয়ে ভালো পিতা মনে করেন? উপরের হাদিসে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ইমাম হুসাইনের জন্য নিজের সন্তান ইব্রাহীমকে কোরবানী দিলেন মাওলা মুহাম্মদ (ﷺ)। হুসাইনের জন্য নিজের সন্তান কোরবানী করাও সুন্নতে রসুল (ﷺ)

ভেবে দেখার অনুরোধ। আল্লাহুমা সাল্লেওয়ালা মুহাম্মাদিউ ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম।

মন্তব্য

  • আল্লাহুম্মা সাল্লেওয়ালা মুহাম্মদিউ ওয়ালা আলে মুহাম্মদ ওয়াজ্জিল ফারাজাহুম।

Leave a Reply to Syed Azad